June 18, 2016

জঙ্গী ফাহিমের ক্রসফায়ার (ভিডিওসহ)

একই পোশাকে পুলিশ ও জঙ্গি (ছবিটি প্রতিকী)

একই পোশাকে পুলিশ ও জঙ্গি (ছবিটি প্রতিকী)

মাদারিপুর প্রতিনিধিঃ মাদারিপুরে কলেজ শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীর উপর হামলা করতে গিয়ে জনগণের হাতে ধরা খাওয়া জঙ্গী ফাহিমকে বন্দুকযুদ্ধের নাম করে পুলিশ মেরে ফেলেছে। মেরে ফেলার পর আজ শনিবার সকালে ফাহিমের লাশ মাদারিপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

মাদারিপুর পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, তারা নিরূপায় হয়ে ফাহিসমে ক্রসফায়ারে ফেলেছেন। এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা যে একজন পুলিশ সুপার এবং তার নাম যে সারোয়ার হোসেন, এটা প্রতিবেদনে উল্লেখ না করার অনুরোধ করেন। তাই আমরা উল্লেখ করতে পারছি না বলে পাঠকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।

উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ফাহিম ১৮ বছর বয়সী জিপিএ ৫ পাওয়া জঙ্গী। সে হিজবুত তাহরীর এর সাথে সম্পৃক্ত। এক বড় ভাই ফাহিমকে এই পথে নিয়ে এসেছে। আর আমরা পুলিশরা ফাহিমকে বেহেশতের পথে নিয়ে গেলাম।

বিচারের আওতায় না এনে ক্রসফায়ারে দেয়ার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ছেলেটি সুন্দরভাবে সব কিছুর জবাব দিয়ে যাচ্ছে। তার নাম, বাপ মায়ের নাম, বয়স কত, প্রেম করে কিনা, বিড়ি খায় কিনা, মাস্টারবেট করে কিনা, সবকিছুর জবাবই সে দিচ্ছে। আমরা নিচ্ছি। খুব ভালো লাগছিলো। তাকে চা অফার করেছি, কিন্তু সে বললো খাবে না। সে চা খায় না। তো, আলাপ চলতে চলতে এক পর্যায়ে জঙ্গী ফাহিম আমাদের খালু, ফুফাদের নাম বলতে শুরু করে। আমরা বলেছি, না, এটা হতে পারে না। এতটুকুন বাচ্চা এত বড় বড় মানুষের নাম কেন জানবে? এটা মেনে নেয়া যায় না। আমরা মেনে নেইনি।”

“তারপর আমরা হিজবুত তাহরীরের সাথে যোগাযোগ করি। বলি, তোমাদের ছেলেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাও, ও বেশি বুঝে। জবাবে বললো তারা ক্লান্ত। এখন ছিনিয়ে নিতে পারবে না। পরে দেখা যাবে। এবার যোগাযোগ করি আনসারুল্লাহ বাংলা টীমের সাথে। আনসারুল্লাহরা বলে ফাহিমকে দিয়ে ফেসবকে আইডি খুলিয়ে ধর্মকে অবজ্ঞা করে একটা স্ট্যাটাস দিতে। তারপর থানার সামনে ৫ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিলে তারা ২ মিনিটের মধ্যে কল্লা ফেলে দিবে। কিন্তু আমরা রাজি হইনি। বলেছি চাপাতি দিয়ে কোপানো যাবে না। আর থানার সামনে ছাড়া যাবে না। তাকে গুলি করে মারতে হবে। আনসারুল্লাহ বলেছে গুলি করে মারলে সওয়াব কম। চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মেরে তারপর অনেকগুলো গুলি করে দিবে, সমস্যা নেই। আমরা মানা করে দিয়েছি।”

এরপরই কি আপনারা ক্রসফায়ারে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন? জিজ্ঞাসা করলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “না, আমরা চেষ্টার কোন ক্রুটি করিনি। সংগঠনগুলোর দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছি, ছেলেটার জন্য একটু বেহেশতে ভিক্ষা চেয়েছি। কিন্তু কেউই ফাহিমকে বেহেশতে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলো না। তো, আনসারুল্লাহর পর আমরা জেএমবির কাছে যাই। তারা বলে সাঁড়াশি অভিযানে অনেক মুজাহিদ ধরা পড়েছে। এখন অপারেশন চালানোর ইচ্ছে নেই। তাছাড়া এই মালতো তাদের না। হিজবুত তাহরীরের। তাদের মাল তারাই সামলাবে।”

তারমানে এরপরই তাকে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেন, তাই না? “না, তখনো আমাদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গেনি। চিরুনি চালিয়ে খবর নিয়েছি ফাহিম কোন মন্ত্রী, এমপি, সচিব, নেতা, উপনেতা’র আত্মীয় কিনা। ভেবেছি সেরকম কিছু হলে জামিন পাইয়ে দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দিবো। কিন্তু কানেকশন পেলাম না। তারপর বাধ্য হয়ে ওলামালীগের সাথে যোগাযোগ করি। বলি, চাপাতিসহ দুইটা ওলামা পাঠান, একটা খ্যাপ আছে। তারা বলে রোজার দিন, খ্যাপ মারতে পারবে না। অনেক বুঝাইলাম, রাজি হলো না। বলে পুলিশের ফাঁদে পা দিবে না।”

এবার নিশ্চয় আর দেরি করেননি, একদম দিয়ে দিয়েছেন? “আপনার এত তাড়া কেন? আমাদের ঝামেলা আমাদেরকে মেটাতে দেন। ওলামা লীগ ফিরিয়ে দেয়ার পর শেষ ভরসা হেফাজতের সাথে যোগাযোগ করি। বলি, আপনাদের সোনাবাহিনী থেকে অল্প কয়টি সোনা পাঠান, একটা ফ্রাংকেস্টাইন মেরে যাক। অভিমানের সুরে হেফাজত বলে নতুন যেসব জঙ্গী সংগঠনের সাথে পুলিশের সম্পর্ক হয়েছে, তাদের কাছে যেতে। তারপর হেফাজত চলে যেতে থাকে। পেছন থেকে ডাক দিলে ‘আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না…’ গান থেকে চার লাইন শুনিয়ে দেয়।”

বুঝতে পারছি, এরপরও আপনারা ক্রসফায়ার দেননি। বসে বসে ফাহিমের চেহারা দেখেছেন। “আরে না ভাই। চেহারা দেখার সময় কই। যে জানোয়ার আমাদের খালু, ফুফাদের নাম জানে, তাকেতো বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। তাই আবারো যোগাযোগ করি হিজবুত তাহরীরের সাথে। বলি, আমরা ফাহিমকে নিয়ে মিয়ারচরে অভিযানে যাবো। তোমরা ওঁৎপেতে থাকবে। ফাহিম আগে আগে যাবে, আমরা পেছনে। তোমরা ফাহিমকে দু’টি গুলি করবে, আমরা তোমাদের দিকে দু’টি করবো। ফাহিম মরে যাবে, তোমরা চলে যাবে। কিন্তু হিজবুত তাহরীর শুনছিলো না। অনেক চাপাচাপির পর রাজি হলো।”

ওহ মাই গড! তারমানে ওরা নিজেদের জঙ্গী নিজেরা মেরেছে? “না, তা মারবে কেন? আমরা ভোরে মিয়ারচরে গিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যাওয়ার পরও দেখি কেউ গুলিটুলি করছে না। কোন সাড়াশব্দ নাই। আসলে হিজবুত তাহরীর আসেনি। বেঈমানী করেছে। তো, ফেরার পথে নিরূপায় হয়ে আমরাই গুলি করে দিলাম। আসলে কিছু করার ছিলো না। এখন মনে করেন যে ঝামেলা কমে গেলো। সামান্য জিজ্ঞাসাবাদে সাপ বেরিয়ে এসেছে, পরে দেখা যাবে হাঙ্গর, কুমির, ডাইনোসর সব লাইন ধরে বেরিয়ে আসতেছে। কী দরকার এত রিস্কে যাওয়ার।”

তো, নিজেরা মেরে হিজবুত তাহরীরের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন কেন? “আহা! তাদেরইতো মারার কথা ছিলো। অর্থাৎ তারা তাদের জঙ্গীটাকে মারবে বলে কথা দিয়েছিলো। কিন্তু ঘটনাস্থলে আসতে পারেনি, তাই আমরা ফাহিমকে অন বিহাফ অব হিজবুত তাহরীর মেরে দিয়েছি। সেক্ষেত্রে দায় আমরা নিবো কেন?”

সবশেষে এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানালেন এটা একটা সংকেত ছাড়া অন্য কিছু নয়। একজন জঙ্গী জিহাদ করতে গিয়ে পাবলিকের হাতে ধরা খাইতেই পারে, এমনকি সে অনেক গোপন কথাও জানতে পারে, কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে যেন সেসব বলে না দেয়, এ জন্য ফাহিমকে কিলিয়ে অন্যদের বুঝানো হয়েছে।

 

দেখুন দুর্ধর্ষ সেই ভিডিওঃ

June 5, 2016

আ.লীগ ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশ এতদিনে আমেরিকা হয়ে যেত – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিচ্ছিন্ন প্রতিবেদকঃ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশ এতদিনে আমেরিকা হয়ে যেত। এই প্রতিবেদকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, “ভাগ্যিস আমরা ক্ষমতায়। নইলে এই দেশে আমেরিকার মত প্রতিদিন শত শত মানুষ সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হত, টাওয়ার ভেঙে যেত, শাকিব খানের বিয়ে হত, অপু বিশ্বাস মোটা হত, সাবিলার নেইলস বড় হয়ে গেলে সে ভাত বেশি খেত। একটা চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিত।”

দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও জঙ্গীবাদ দমন বিষয়ে তার বিরুদ্ধে জনগণের অভিযোগ অস্বীকার করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল। অস্বীকার করে তিনি বলেন “দেখুন, এটা একটা অবান্তর অভিযোগ। আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, আমি সবসময় জঙ্গী দমন করি। হয়তো আমার সেলিম ওসমান অত্যন্ত ভারী হওয়ার কারণে বাইরে গিয়ে জঙ্গী দমন করতে পারি না, কিন্তু অফিসে বসে বসে দমন করি। জানেনইতো, মন্ত্রী হওয়ার আগে আমার সেলিম ওসমান খুব হালকা ছিলো, কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার পর এটা খুব ভারী হয়ে গেছে। এত ভারী সেলিম ওসমান নিয়ে বসা থেকে উঠতে কষ্ট হয়, বয়ে বেড়াতে কষ্ট হয়। কষ্ট না হলে শহরের অলি গলি তন্ন তন্ন করে জঙ্গী খুঁজে বের করতাম, তারপর দমন করতাম। আপনি হয়তো জানেন না, আমি জঙ্গী দমন খুব ভালোবাসি। আই লাইক জঙ্গী দমন।”

বাংলাদেশের সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

বাংলাদেশের সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ মন্ত্রীসভার কয়েকজন সদস্য সবসময় বলেন বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ দেশ, অথচ কিছুদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশ পৃথিবীর ৩৩ তম নিরাপদ দেশ। এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষন করলে তিনি বলেন, “হা হা হা। জানেন, এটা বলার পর পাবলিক রিঅ্যাকশন দেখে খুব হতাশ হয়েছি, টাশকি খেয়েছি। পাবলিক শুধু মতিকণ্ঠের স্যাটায়ারই বোঝে, কামালের স্যাটায়ার বোঝে না। বাংলাদেশ পৃথিবীর ১ নাম্বার নিরাপদ দেশ, আমি স্যাটায়ার করে বলেছি ৩৩ নাম্বার। অথচ পাবলিক তা বুঝলো না। পাবলিক আমাকে ষাঁড় বললো, ভাঁড় বললো, উন্মাদ বললো, ছাগল বললো। আমি কিছু মনে করিনি। কারণ ওরা আমার অবুঝ, ওরা আমার কাঁচা; আমি আমার আধমরাদের ঘা মেরে বাঁচাবো। এটা আমার এইম ইন লাইফ।”

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হলেন। তিনি একজন পর্দানশীল মুসলিম রমণী এবং অবশ্যই ব্লগার নন, কখনো সীমা লংঘন করেননি। তার খুনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিমত জানতে চাইলে মন্ত্রী অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেন। দুঃখ প্রকাশ করতে করতে চেয়ারের উপর হেলান দিয়ে শুয়ে পড়েন, তারপর শুয়ে শুয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। দুঃখ প্রকাশ শেষে মন্ত্রী জানালেন সন্দেহের তীর জঙ্গীদের দিকে। কারণ বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু মুসলিম, ঠিক আছে। তিনি পর্দানশীল, তাও ঠিক আছে। তিনি হিজাব পরেন, এটাও ঠিক আছে। কিন্তু মৃত্যুকালে তার নিকাব পরা ছিলো না। মুখ উন্মুক্ত ছিলো। তিনি কেন মুখ উন্মুক্ত রেখেছেন, এ বিষয়টা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মন্ত্রী কামাল। কামাল বলেন, “যেহেতু মিতু ব্লগ লিখত না, ফেসবুকে স্ট্যাটাস লিখত না, সেহেতু আমরা তার বোরকা, হিজাব ও নিকাব খতিয়ে দেখবো। খুন করা অপরাধ, অন্যায়। কিন্তু মিসেস বাবুল আখতারেরও এভাবে চেহারা দেখি চলাফেরা করা উচিত হয়নি।”

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী হামলার পরিমাণ কমে এলেও বাংলাদেশে জঙ্গী হামলার ঘটনা বেড়ে চলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এরকম একটি প্রতিবেদনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করলে মন্ত্রী ক্ষেপে যান। ক্ষেপে গিয়ে বলেন “আম্রিকা যখন এসব বলে, পাবলিক তখন খুব খায়। আর আমরা যখন বলি বাংলাদেশ জঙ্গী দমনে রোল মডেল, তখন পাবলিক পেছন ঘুরে আমাদেরকে সেলিম ওসমান দেখায়। পাবলিক সবসময় আমার সেলিম ওসমান মেরে দেয়ার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। এই দেশের পাবলিকের কোন চরিত্র নেই। তাই আমরা মন্ত্রী এমপিরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা আমাদের সেলিম ওসমানের নিরাপত্তা চাই। ইজ্জত নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। মন্ত্রী হলেও আমরাতো মানুষ। আমাদেরও আছে সম্মানের সহিত বেঁচে থাকার অধিকার।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছাড়াও ধর্ম, বিজ্ঞান, বাজেট ও মুস্তাফিজ নিয়ে কথা হয়। ধর্ম ও বিজ্ঞান নিয়ে বলা তার কথাগুলো এই প্রতিবেদনে অনুল্লেখ রাখার অনুরোধ করে তিনি বলেন, “ভাই ধর্ম আর বিজ্ঞান নিয়ে যা বলছি, তা লিইখেন না। জঙ্গীদের মা বাপ নাই।”

May 27, 2016

জমজম কূপের পানি সেক্স পাওয়ার বাড়ায়ঃ এরশাদ

জমজম কূপের পানি খেলে আমার মত পাওয়ারফুল থাকবেন - এরশাদ

জমজম কূপের পানি খেলে আমার মত পাওয়ারফুল থাকবেন – এরশাদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জমজম কূপের পানি ‘ইয়ে’র পাওয়ার বাড়ায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক এই সেনা প্রধান বলেন, “কালা জ্বর, চোরা জ্বর, শিরায় শিরায় জ্বর, অঙ্গে অঙ্গে জ্বর, ঘন ঘন প্রস্রাব, টিপে টিপে প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, খাউজানি, চুলকানি, সর্ব প্রকার যৌন ও চর্ম রোগ, ক্যান্সার, এইডস, হাঁপানি, ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি, কাশিসহ সর্ব রোগের মহৌষধ হচ্ছে জমজম কূপের পানি।”

তারপর খুব লাজুক লাজুক চেহারায় বলেন, “এখানে অনেকেই হয়তো লজ্জা পাবেন, কিন্তু লজ্জা পাবার কিছু নেই। তাছাড়া পুরুষের জন্য একটা খুব জরুরী বিষয়। এটা জেনে রাখা দরকারি। জমজম কূপের পানি পুরুষের যৌন শক্তি বাড়ায়। আমি এই কূপের পানি খেয়েছি বলেই এতকিছু সম্ভব হয়েছে। জমজম কূপের পানি না খেলে সব অর্জনই অসম্ভব হয়ে যেতো।”

এরপর আচমকা নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক নির্যাতন প্রসঙ্গ এনে এরশাদ একটি স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি শুরু করে দেন। কবিতার নাম “আল্লাহর ওলি, ফুলের কলি।”

সেলিম ওসমান আল্লাহর ওলি,

আমি হলেম ফুলের কলি।

রাতের বেলা শরম করে, তাই

দ্বীনের পথে চলি।

ওলির কাছে আসো

ফুলের মত হাসো।

সুন্দরী নারী দেখলে

মৃদু স্বরে কাশো।

আমরা সবাই আল্লাহর ওলি,

আমরা সবাই ফুলের কলি।

কবিতা আবৃত্তি শেষে তিনি নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যান। আক্রান্ত হয়ে বলেন, “গান, কবিতা, ফুল. প্রেম আমাকে পাগল করে দেয়। কত কিছু মনে পড়ে যায়। নদীর কথা, গ্রামের কথা, সমুদ্রের কথা, ঝরনার কথা, পাহাড়ের কথা… কত কথা। আহারে পাহাড়! আজ নাকি বান্দরবনের থানচি’র মানুষ চালের অভাবে জংলি আলু আর কলাগাছ খেয়ে বেঁচে আছে। কী বোকা! কী বোকা! আসলে যে যত উপরে থাকে, সে তত বোকা হয়, মূর্খ হয়।”

এরশাদ বলেন, “সেলিম ওসমান অষুধ পাচ্ছে না, জমজম কূপের পানি খেয়ে বেঁচে আছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যর্থতার কারণে কাউকে মুখ দেখাতে পারতো না। এখন জমজম কূপের পানি খেয়ে সংবাদ সম্মেলনে নির্লজ্জের মত হাসে। খালেদা জিয়ার টাকার অভাব, পানি কিনতে পারেন না। ওই পানির বদলে এখন এই পানি খান। কাজ হয়ে যায়। শেখ হাসিনাতো জমজম কূপের পানি খেয়ে দেশের মোল্লাদের নাকে দড়ি লাগিয়ে ঘুরাচ্ছেন, রেলের জমি দিচ্ছেন, সবকিছু সামাল দিচ্ছেন। তাই অতিসত্ত্বর থানচির দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের জন্য জমজম কূপের পানি পাঠানোর দাবি জানাই। এই পবিত্র পানির উপর গরীবেরও হক আছে। তাদের হক বুঝিয়ে দিতে হবে।”

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্ন আহবান করলে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আপনি কি ওই কাজের সময় শুধুই জমজমের কূপের পানি খান? এতেই হয়ে যায়?” জবাবে এরশাদ একটা চোখ টিপুনি দিয়ে বলেন, “কী বোকা! কী বোকা! জমজম কূপের পানি দিয়ে টেবলেট খাই, এটাও বুঝে না! ব্যাটা, শুধু পানিতে কী আর হয়, সাথে দুই চারটে হারবাল না থাকিলেই নয়।”

December 23, 2015

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ ১ জন – খালেদা জিয়া

শহীদের সংখ্যা নিয়ে গবেষনা করতে করতে ক্লান্ত খালেদা জিয়া।

শহীদের সংখ্যা নিয়ে গবেষণা করতে করতে ক্লান্ত খালেদা জিয়া।

মগবাজার ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ বলা হয়, এটা নিয়ে বিতর্ক আছে।”

তার বক্তব্য নিয়ে সৃষ্ট বিকর্তকে অহেতুক বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, “নিশ্চয় আমার মাঝে বিশেষ কিছু আছে। নইলে আমি কিছু বললেই বিতর্ক হয়ে যায় কেন?” আজ সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

বিবৃতিতে বেগম জিয়া বলেন, “আমি বললাম মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তারপর সবাই ক্ষেপে যায় এবং গভীরভাবে লক্ষ্য করলাম আমাকে নিয়েই একটি বিতর্ক হয়ে যায়।”

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করেন। তাকে গবেষণা শুরু করতে হয়েছে কারণ কোন রকম গণনা ছাড়াই বলা হয়ে থাকে শহীদের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ। খালেদার মতে এটা ঠিক নয়। গণনা ছাড়া সংখ্যা নির্ণয় করা মারাত্মক অসততা। এসব যারা করে তারা অসৎ।

তাই তাকেই সৎ লোক হতে হয়েছে এবং শহীদের সঠিক সংখ্যা নির্ণয়ে নিরলস পরিশ্রম করতে হয়েছে। গবেষণা শেষে তিনি দেখতে পান, শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিশাল নয় ছয় হয়েছে। এখানে দুর্নীতি হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়ার স্বাক্ষর করা বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা মূলত ত্রিশ লক্ষ একজন। খুব সুকৌশলে হিসাবে একজন শহীদ কম দেখানো হয়। আমি এই কথা আমার দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে বললাম। ফখরুল আমাকে বলে, “ম্যাডাম, এক কম হলে আর কী হয়!” আমি ফখরুলের কথা শুনে অবাক হয়ে যাই। তারপর ফখরুল আমাকে আরো অবাক করে বলে, “ম্যাডাম, কয়দিন আগে নিউজে পড়েছি হিটলারেরও নাকি এক কম ছিলো। তাতে কী হয়েছে? হিটলারের এক বিচি কম থাকায় কি যুদ্ধ কম হয়েছে? হয় নাই।” তারপর ফখরুলের প্রতি আমার রাগ হয়। কারণ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ ১ জন শহীদ হয়।

বেগম জিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রকৃত শহীদের সংখ্যা হচ্ছে ৩০ লাখ + শহীদ জিয়া = ৩০ লাখ ১ জন। বঙ্গবন্ধু না হয় শহীদ জিয়ার মৃত্যুর আগে বলেছিলেন শহীদের সংখ্যা ৩০ লাখ। কিন্তু শহীদ জিয়ার মৃত্যুর পর আমরা কেন সেটাকে ৩০ লাখ ১ জন বলবো না? সবার প্রতি এই প্রশ্নটি রইলো।

সবাই বলে “শহীদ জিয়া মারা গেছেন মুক্তিযুদ্ধের পর। তাহলে তিনি ক্যামনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন?” এটা কোন প্রশ্ন হলো? আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধ ভুলে যাই। সবাই মনে করে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। তাই বিএনপি মাঝে মাঝে মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই যে কিছুদিন আগে লাগাতার পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ মেরে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছি যুদ্ধ কত ভয়াবহ। মানুষ বুঝতে পেরেছে যুদ্ধ এখনো শেষ হয় নাই।

শহীদ জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বশেষ শহীদ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, শহীদ জিয়াই মুক্তিযুদ্ধের সর্বশেষ শহীদ। এরপর বাংলাদেশে আর কোন শহীদ আসবে না। আমি বলি বিষয়টা মানিয়া লও। কিন্তু আমি জানি তোমাদের ঘাড় ত্যাড়া, তোমরা এটা মানিয়া লইবে না।

এর আগে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ দুপুরে আরজে শহীদ জিয়া বেতারে বললেন তিনি বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষনার দিচ্ছেন। আওয়ামীলীগ মানিয়া লয় নাই। তারা ধমক দিয়ে বলে ‘অন বিহেফ অব শেখ মুজিব’ বলিতে। জিয়াউর রহমান মানিয়া লইলেন। তারও অনেক পরে আমি বললাম আরজে শহীদ জিয়াই স্বাধীনতার ঘোষক। তোমরা কেউ মানিয়া লও নাই। এখন আমি আবার বললাম মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ ১ জন। এইটা মানিয়া লও। এইটা মানিয়া লইতে তোমাদের কী সমস্যা? তোমরা কি মনে করো মুক্তিযুদ্ধে শুধুই ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হইছে? এইটা তোমরা কিভাবে ভাবতে পারো! তখনকার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী, সুন্দর, সুঠাম ও বলিষ্ঠ সেনাবাহিনী দীর্ঘ ৯ মাসে মাত্র ৩০ লাখ মানুষ মেরেছে? না। নিশ্চয় তারা আরো একজন বেশি মেরেছে। হয়তো সেটা যুদ্ধের পরে মেরেছে। তাই বলে তোমরা তাকে শহীদ হিসেবে গোনায় ধরবা না?

শহীদ জিয়াকে বাংলার জনগণ ভালোবাসতো। বঙ্গদোস্ত শহীদ জিয়াকে যারা মেরেছে তারা কখনো বাংলাদেশি হইতে পারে না। তারা অবশ্যই পাকিস্তানি। তাহলে পাকিস্তানের হাতে নিহত শহীদ জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ হিসেবে গণনা করিতে তোমাদের সমস্যা কোথায়? – এ প্রশ্ন রাখেন তিনি।

October 28, 2015

জজ মিয়া নাটকের কপিরাইট দাবি করেছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঢাকায় আওয়ামীলীগের সমাবেশে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর বিচারের নামে তামাশা করতে গিয়ে লজ্জাজনক এক নাটক সাজায় তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকার। ইতিহাসের পাতায় এটি ‘জজ মিয়া নাটক’ নামে জায়গা করে নিয়েছে। গ্রেনেড হামলার সত্যিকারের অপরাধীকে আড়াল করার জন্য নিরপরাধ সিডি বিক্রেতা জজ মিয়াকে আটক করে হামলার মূল হোতা বানানোর চেষ্টা করে।

বহুল আলোচিত জনপ্রিয় এই নাটকের স্ক্রিপ্ট যেন কেউ নকল করতে না পারে, সে বিষয়ে উদ্যোগী হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আজ বিকেলে পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই নাটক বিএনপির, এই নাটক খালেদার, এই নাটক তারেকের। বাংলার বুকে আর কাউকে এই নাটকের স্ক্রিপ্ট নকল করতে দেয়া হবে না। আমরা পেটেন্টের জন্য আবেদন করবো।”

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন

দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় সরকার জজ মিয়া নাটক সাজানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন রিপন। তিনি বলেন, “এই নির্লজ্জ সরকার নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ‘জজমিয়া’ নাটকের আদলে ‘বড় ভাই’ নাটক সাজানোর অপচেষ্টা করছে। তাদের লজ্জা থাকা উচিত। তারা এভাবে নাটক সাজাতে পারে না।”

জজ মিয়া নাটকের ব্যবহারিক বিধিনিষেধ এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রিপন বলেন, “আমরা একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধানসহ শীর্ষনেতাদের খতম করার অপারেশনে যে নাটক ব্যবহার করেছি, মাত্র দুইজন বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় সেইম নাটক ব্যবহার করে তারা নাটকের মেরিটকে অপমান করতে পারে না। এই অধিকার তাদেরকে কেউ দেয়নি।”

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের নেত্রীর সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন উনার সৃজনশীল স্ক্রিপ্টে যদি কেউ হাত দেয়, তাহলে সেই কুলাঙ্গারের নাম পাল্টে দিবেন।”

আপনারা জজমিয়া নাটক সাজাতে পারলে আওয়ামীলীগ কেন বড়ভাই নাটক সাজাতে পারবে না? এই প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “বিএনপি অধম বলিয়া কি আওয়ামীলীগ উত্তম হইবে না?” তিনি বলেন, “এই জাতি বিএনপির কাছে কিছুই আশা করে না। সবকিছু আওয়ামীলীগের কাছে আশা করে। জাতির পিতা, জয় বাংলা, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব, সব আওয়ামীলীগের। আমাদের ভাগে পড়েছে শুধু একজন আরজে। একজন আরজে দিয়ে আমরা আর কীইবা করতে পারি?”

তিনি আরো বলেন, “আমরা আওয়ামীলীগকে বলেছি, তোমরা আরজে জিয়াকে নিয়ে যাও, আমাদেরকে একটু জাতির পিতা ও জয় বাংলার ভাগ দাও। তারা বলে, আরজে জিয়া একটা খবিশ, তার উচ্চারণ ভালো না।”

“যারা দুই টাকার আরজে নিতে রাজি হয়নি, তাদেরকে কিভাবে কোটি টাকার জজমিয়া নাটকের স্ক্রিপ্ট দিয়ে দিই?” পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের নাম বললে আপনারা চিনবেন না।

October 27, 2015

দেশে চোখের চিকিৎসার মান খুব খারাপ – খালেদা জিয়া

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া

লন্ডন প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশে চোখের চিকিৎসার মান নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডনের দ্যা এ্যাট্রিয়াম অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বেগম জিয়া বলেন, “দেশে চোখের চিকিৎসার মান অত্যন্ত খ্রাপ।”

তিনি বলেন, “দেশে চোখের চিকিৎসার মান ভালো না, তাই আওয়ামীলীগকে ক্ষমতা থেকে নামানো যাচ্ছে না। তাই গণতন্ত্র আজ খাঁচাবন্দী।” এসময় হাতের ইশারায় একটি খাঁচার আকৃতি তুলে ধরেন তিনি।

বেগম জিয়া বলেন, “আমি বাংলাদেশের ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। আপোষহীন দেশনেত্রী, অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দলের চেয়ারপার্সন, প্রয়াত জনপ্রিয় আরজে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী, ডেমোক্রেসি ফর মার্চ-এপ্রিল-মে-জুন-জুলাই এর অধিনায়ক, এনটিভির একজন নিয়মিত দর্শক। অথচ আমার চোখে ছানি পড়েছে। আমি কিছুই দেখতে পাই না।”

চোখে ছানি পড়ার কারণে সরকার পতন আন্দোলন সফল হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার চোখে ছানি পড়েছে, এই ফাঁকে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিলো। আমি দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করতে পারিনি। সুন্দরবনে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র করে যাচ্ছে সরকার। আমি দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করতে পারিনি। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে। আমি দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করতে পারিনি। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পিটিয়েছে। আমি দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করতে পারিনি। একের পর এক ব্লগার হত্যা হয়েছে। আমি তাদের রক্তাক্ত বীভৎস চেহারা দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করতে পারিনি। ষোল কোটি মানুষকে অভুখ রেখে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির বেতন দ্বিগুন করেছে। আমি দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করতে পারিনি। সাকা চৌধুরীর পক্ষে সামান্য ক’জন পাকিস্তানিদের স্বাক্ষি হিসেবে আসতে দেয়নি। আমি দেখতে পাইনি, তাই আন্দোলন করিতে পারিনি।”

বেগম জিয়া বলেন, “আমি যদি দেখতে পাইতাম, তাহলে একটি জামায়াত, দুইটি আন্দালিব পার্থ, তিনটি মাহি বি চৌধুরী, চারটি গোলাম মাওলা রণি, পাঁচটি কাদের সিদ্দিকী, ছয়টি অলি, সাতটি বাবু নগরী, আটটি শফি হুজুরকে সাথে নিয়ে নয় দশটি আন্দোলন করিতাম এবং এই সরকারের ক্ষমতা ছিঁড়িতাম। ক্ষমতা ছিঁড়িয়া অবসর সময়ে বসে বসে আঁটি বাঁধিতাম। আঁটি বাঁধিয়া কাওরান বাজার যাইতাম। কাওরান বাজার গিয়ে সেই আঁটিগুলি বেচিতাম। বেচিয়া লাভের টাকা থেকে ১০ পারসেন্ট আমার ছেলের জন্য লন্ডনে পাঠাইতাম। এই টাকা দিয়া সে হাত খরচ চালাইতো।”

“অথচ, সরকার ষড়যন্ত্র করে দেশে চোখের চিকিৎসার মান খারাপ করে রেখেছে। তাই আমার চোখে ছানি পড়েছে। আমি কিছুই করতে পারিনি। এনটিভির অনুষ্ঠান দেখতে পারিনি।” – বলেন তিনি।

তুলে নাও চোখের ছানি, ফিরিয়ে দাও সিংহাসন খানি - বেগম জিয়া

তুলে নাও চোখের ছানি, ফিরিয়ে দাও সিংহাসন খানি – বেগম জিয়া

এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিক্ষুব্দ এই দেশনেত্রী। একজন জনপ্রিয় আরজে’র স্ত্রী হয়েও আপনি কেন শোনার চাইতে দেখার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন? এমন এক প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়া বলেন, “দেখুন, আমি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল এনটিভির একজন নিয়মিত দর্শক। আর কিছু বলতে হবে?”

দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “ম্যাডাম, আপনিতো দূর্গা পূজার সময় মূর্তি ভাঙতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের ধরা খাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন, এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?” জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, “ওই যে, গণধোলাই সবাই খায়, নাম হয় শুধু বিএনপির!”

প্রিয় ডট কম এর লন্ডন প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়া অভিযোগের সূরে বলেন, “আপনারা সানিকে নিয়ে প্রতিদিন নিউজ করতে পারেন, কই ছানি নিয়েতো কোন নিউজ করলেন না!” তিনি বলেন, “শোনার চাইতে দেখা ভালো, সানির চাইতে ছানি ভালো।”

কিন্তু আপনার চোখে ছানি পড়ার সাথে গণতন্ত্রের সম্পর্ক কী? বিডিনিউজ২৪.কম এর সাংবাদিকের করা এই প্রশ্নের জবাবে বেগম জিয়া তার স্মার্টফোনের ক্যালকুলেটর এপসটি ওপেন করেন। ওপেন করে বলেন, “দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি। বিএনপির মোট জনসমর্থন ৩৩ পার্সেন্ট। ১৬ কোটির ৩৩ পার্সেন্টে কত হয়?” এ সময় সাংবাদিকরা নিরব থাকলে বেগম জিয়া হাসতে হাসতে বলেন, “একটাও অংক জানে না। ১৬ কোটির ৩৩ পার্সেন্টে হয় ৭৬৩ জন। এই ৭৬৩ জন হচ্ছে গণতন্ত্রের ৩৩ মার্ক। পাস মার্ক। পাস মার্কের চোখে ছানি পড়েছে। গণতন্ত্র ফেল। হিসাব বুঝা গেছে?”

সাংবাদিকরা সবাই সমস্বরে বলেন, “জ্বি ম্যাডাম, বুঝা গেছে।”

October 25, 2015

দেশে এখন লাল টমেটোর বাজার নাই- বেবী নাজনীন

লাল টমেটোর বাজার এখন মন্দা! - বেবি নাজনীন

লাল টমেটোর বাজার এখন মন্দা! – বেবী নাজনীন

নিউইয়র্ক প্রতিনিধিঃ বিখ্যেত সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন বলেছেন,’ দেশে গান গাইবার পরিবেশ নাই- এইজন্য বিদেশ আসিয়া পলিটিক্যাল এসাইলাম মারিয়া বইসা আছি। খুকা ভাইয়ের কিছু হলে টেকাটুকা আমি পাহারা দিব।’ এইসময় পাশ থেকে জাসাসের একজন বলেন, ‘টেকাটুকা নয়, বলেন ডলার, ডলার।’

চার ভাগে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হইলে সেখানে বেবী নাজনীন এই কথা বলেন। দেশে গান গাইবার পরিবেশ নাই কেন এইকথা জিজ্ঞেস করলে বেবি নাজনীন বলেন, ‘ পরিবেশ থাকবে কেমনে, শিবিরের সব কচিকচি পুলাপানগুলুরে এখন সভা করতে দেয় না-আমি কুথায় গান গাইব? ছাত্রদলের গুলা তো পুলা নয়, পুলার বাপ। বুড়া পরিবেশ কি যৌবন লাল টেমটো গান গাওয়া যায়?’ এই কথা বইলা তিনি চোখটিপি দেন।

এইসময় তার সেখানে উপস্থিত এক ছাত্রদল নেতা নিজের টাকে হাত বুলাইতে বুলাইতে কথার প্রতিবাদ করে বলেন, ‘এই মহিলার কথা বিশ্বাস করবেন না, এই মহিলা মিথ্যাবাদী। ‘বেইবি’ নাম শুইনা আইসা দেখি এইখানে কোনো বেইবি নাই, আছে বেইবির বড় খালাম্মা। চারভাগের বিএনপিরে এই মহিলা দিয়া জুড়া দেয়া যাইবে না। পুরান আঠায় লাগে না লাগে না জোড়া।’

সভার মাঝখানে চাইরভাগে বিভক্ত বিএনপির কর্মীরা হাতাহাতি করে চলে যাওয়ার সময় বেইবি নাজনীন পিছন থেকে ডেকে বলেন, ‘যৌবন একটা লাল টমেটো গানটা শুইনা যাইও।’ এইসময় বিএনপির নেতাদের বলতে শোনা যায় , দেশে এখন লাল টমেটোর বাজার ভালো না। দেশে এখন আন্ডার দাম ভালো।’

এইসময় দূরে দাড়ানো খুকা ভাই, ‘ও সাকা ভাই..ও রাজহাসের ডিম..’ বইলা ফুপাইয়া কানতে থাকেন।

October 25, 2015

তথ্য ছিলো, কাজে লাগাইনি – পুলিশের আইজি

পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক

পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক

রাজধানীর হোসনি দালানে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিতে বোমা হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। কিন্তু পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। সরকার ও আওয়ামীলীগ বলছে অন্য কথা। তাদের কারো কথার সাথে আইএস এর দাবির সাথে মিল নেই।

এ বিষয়ে দৈনিক মগবাজারের মুখোমুখি হয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক।

দৈ.মঃ শিয়াদের মিছিলে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। তার মানে বুঝা গেলো আইএস এই হামলা করেছে। আপনার কী মনে হয়?

আইজিঃ দেখুন, আইএস হচ্ছে ফরেইন জংগী। এই দেশে ফরেইন বলেন আর লোকাল বলেন, কোন জঙ্গীই নেই। আপনিই খুঁজে দেখুন না, কোথাও একটা জঙ্গীও পাবেন না। সুতরাং এটা জঙ্গীদের কাজ নয়।

দৈ.মঃ তাহলে হামলা কে করেছে?

আইজিঃ এটা পরিকল্পিত হামলা এবং এই হামলার তথ্য আমাদের কাছে ছিলো। তথ্য থাকলেও আমরা নাশকতা ঠেকাইনি। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্র সুসংহত করার স্বার্থে আমরা নাশকতাকারীদের সুযোগ দিয়েছি।

দৈ.মঃ কিন্তু এই সুযোগেতো ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর দায় দায়িত্ব কে নিবে?

আইজিঃ কে বলেছে আপনাকে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে? একই সময়ে পাকিস্তানে শিয়াদের উপর হামলায় ৩০ জনের বেশি নিহত হয়েছে, নাইজেরিয়ায় মসজিদে বোমা হামলায় ৪২ জন নিহত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ১ জন নিহত হয়েছে। এটাকে কোনভাবেই ব্যাপক বলা যায় না। তাছাড়া হতাহতের দায়তো আইএস স্বীকার করেছেই, আবার আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কেন!”

দৈ.মঃ কিন্তু আপনিতো বলেছেন আইএস এই হামলা করেনি।

আইজিঃ সেটাতো আমি বলেছি, আপনিতো বলেননি। আপনি যা বলেন, তা কি বিশ্বাস করেন না? আপনি কি অবিশ্বাসী? আপনি কি সীমা লঙ্ঘন করেন?

দৈ.মঃ ইয়ে মানে, না, ঠিক আছে, আমি ঠিক আছি, বিশ্বাসী। কিন্তু তথ্য থাকা সত্ত্বেও কেন নাশকতা ঠেকাননি?

আইজিঃ নাশকতা ঠেকিয়ে দিলেতো নাশকতাকারীদের গ্রেফতার করা যেতো না। নাশকতাকারীদের ধরার জন্য এটা আমাদের বিশেষ কৌশল। আগে নাশকতা করো, পরে ধরা পড়ো। নাশকতা হয়েছে, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ফুটেজ সংগ্রহের জন্য একটা কমিটি গঠন করেছি, ফুটেজ বাছাইয়ের জন্য একটা কমিটি, যাচাইয়ের জন্য একটা কমিটি, বিশ্লেষনের জন্য আরেকটা কমিটি, এবং সবগুলো কাজ তদারকির জন্য আলাদা একটা কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটির কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য একটা ট্রান্সপারেন্সি কমিশন গঠন করেছি। নাশকতা না হলেতো এতগুলো কাজ সম্ভব হতো না।

দৈ.মঃ এতগুলো কাজ করার পর আপনারা কী করবেন?

আইজিঃ এরপর আমরা নাশকতাকারীদের গ্রেফতার করবো, বিচারের মুখোমুখি করবো, জামিন পাইয়ে দিবো, বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করবো, অপরাধীকে দেশছাড়া করবো, সুবিচার নিশ্চিত করবো।

দৈ.মঃ এখন পর্যন্ত কোন ক্লু পেয়েছেন, যা ধরে তদন্ত শেষ করতে পারবেন?

আইজিঃ আমরা কোন ক্লু না পেলেও বলে দিতে পারবো কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা কোন সমস্যা না। এটাতো আমরা আগে থেকেই জানি।

দৈ.মঃ তাহলে তা প্রকাশ করছেন না কেন?

আইজিঃ করবো না কেন? এখনই করবো। প্রথমত বোমা ফাটিয়েছে ব্লগার বিএনপি। তারপর ফাটানো বোমার ছিন্নভিন্ন অংশ কুড়িয়ে নিয়ে আবার ফাটিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ব্লগার খালেদা জিয়া। এরপর বোমা গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যায়। গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেলে লন্ডন থেকে এসে বোমার সব গুঁড়ো একসাথ করে একটু জল মিশিয়ে আটার দলার মত বানিয়ে বোমাটি ফাটিয়ে আবার লন্ডন চলে যান বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারপার্সন ব্লগার তারেক রহমান। এবার ফাটানোর পর আটার দলা পুড়ে রুটি হয়ে যায়। শেষে এক ঝাঁক নাস্তিক ব্লগার এসে রুটি পোড়া খেয়ে আবার এসাইলামে ফিরে যায়।

দৈ.মঃ তারমানে তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার সাথে ব্লগাররা জড়িত?

আইজিঃ হ্যাঁ। কিন্তু ব্লগাররা এটা ঠিক করেনি। তারা সীমা লংঘন করেছে। পুলিশ ব্লগারদের ছাড়বে না। আমরা তাদেরকে হেফাজতে নিবো, নিরাপত্তা দিবো, কাউন্সেলিং করাবো, হাতে পায়ে লোশন মেখে দিবো, চুলে চিরুনি করে দিবো, ডিম দিয়ে রুটি খাওয়াবো, ঘুম পাড়ানি গান শুনিয়ে দিবো, তাদেরকে শেষ করে দিবো।

এ কথা বলতে বলতে আইজিপি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, “আপনি চলে যান। আমি এখন উত্তেজিত। আমাকে বাসায় যেতে হবে।”

October 13, 2015

ব্লগারদের জন্য সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত আসন

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ জাতীয় সংসদে এবার ব্লগারদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। সংসদ সচিবালয়ের একটি সূত্র খবরটি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, ব্লগারদের জন্য মোট ৫০ টি আসন রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। শীগ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষনা আসবে।

আস্তিক ব্লগারদের জন্য ২৫টি এবং নাস্তিক ব্লগারদের জন্য ২৫টি আসন থাকবে। শুরুতে মুরাদ টাকলাদের জন্য ১০ টি আসন রাখার প্রস্তাব আসলেও পরে তা বাতিল করা হয়।

শাহবাগ আন্দোলনের পর থেকে দেশে ব্লগার শব্দটি ব্যাপকভাবে আলোচিত। বিতর্কতিও বটে। ব্লগে নোংরা ভাষায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কটুক্তি করার বিষয়টি আমলে নিয়ে সম্প্রতি সরকারও ব্লগারদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ঘোষনা দিয়েছে। পুলিশ, র‍্যাবসহ গোয়েন্দা বাহিনীগুলো তালিকা ধরে কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে তৎপরতা শুরু করেছে। এমতাবস্থায় হঠাৎ ব্লগারদের জন্য সংসদে আসন বরাদ্ধের মত ঝুঁকি নিতে যাচ্ছে সরকার।

সংসদ অধিবেশন চলাকালীন ছবি

সংসদ অধিবেশন চলাকালীন ছবি

এ বিষয়ে আমরা প্রথমে কথা বলি অভিজ্ঞ সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাথে। তিনি জানান, “দেশে কোন বিরোধী দল নাই। জিয়াউর রহমানের বৌয়ের দলের নামটা যেন কী? বিএনপি না কী যেন, ওটাতো বিলীন হওয়ার পথে। বিরোধী দল বলতে এখন ব্লগ ও ফেসবুক। ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টরাই মূলত বিরোধী দলের ভূমিকা রাখছে। তারা সংসদে আসলে ভালোই হবে। এটা গণতন্ত্রের বিকাশে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে।”

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থাকা আনিসুল হক এই প্রতিবেদককে বলেন, “আমরা খেয়াল করেছি ব্লগাররা ব্লগে ফেসবুকে অশ্লীল ইংগিতপূর্ণ লেখালেখি করে। গালাগালি করে, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কটুক্তি করে, সম্মানহানি করে। অথচ ব্লগ হচ্ছে একটা পবিত্র জায়গা। আমরা চাই ব্লগ থাকুক পবিত্র পরিচ্ছন্ন।

তিনি বলেন, “কিন্তু বাক স্বাধীনতার এই যুগে আমরা কারো মুখ বন্ধ রাখতে পারি না। তাই ব্লগারদেরকে সংসদে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লেখালেখি ব্লগে সুন্দর, গালাগালি সংসদে। যেখানে যেটা মানায়। ব্লগাররা সংসদে আসবে, চুতমারানি গাইল দিবে। আমরা তাদের গালি সংসদে শুনতে চাই, ব্লগে নয়।”

ব্লগাররা সংসদে যেতে চায় কিনা, এটা জানার চেষ্টা করেছে দৈনিক মগবাজার। কয়েকজন ব্লগারের সাথে কথা বললে তারা সবাই প্রায় একই রকম মন্তব্য করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্লগার বলেন, “আমরা সংসদে যাবো কেন? তাও আবার সংরক্ষিত আসনে! বরং সাংসদরাই ব্লগে আসুক, ফেসবুকে আসুক। সংসদ হচ্ছে পবিত্র জায়গা। মহান জায়গা। তারা সেখানে গালাগালি বকাবকি না করে ব্লগে আসুক। ব্লগে এসে গালাগালি করুক। তা না করে ব্লগার ও ফেসবুকারদের লেখালেখি বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। সরকারের এসব ইয়ের সিদ্ধান্তকে ইয়ে করার কোন ইয়ে আমাদের নেই।”

আরেকজন ব্লগার বলেন, “ব্লগ ফেসবুকের দুয়ার খোলা। এখানে লেখার জন্য বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হতে হয় না, ভোট জালিয়তি করতে হয় না। যে কেউ চাইলে লিখতে পারে। সাংসদরাও পারবে।”

সরকার শেষ পর্যন্ত ব্লগারদেরকে সংসদে আনতে পারবে কী পারবে না, তা সময় বলে দিবে। কিন্তু সরকারের এমন সিদ্ধান্ত জনমনে কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে অনেকেই শংকিত।

October 11, 2015

মূর্তি ভাঙা প্রতিরোধে আইন হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হিন্দু ধর্মালম্বীদের দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে চলমান মূর্তি ভাঙা উৎসবের লাগাম টেনে ধরতে যাচ্ছে সরকার। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকার মূর্তি ভাঙা নিয়ন্ত্রণ করবে।

‘মূর্তি ও ভাবমূর্তি ভাঙা প্রতিরোধ আইন ২০১৫’ নামের নতুন এ আইনটির খসড়া তৈরির কাজ প্রায় শেষের পর্যায়ে। বুয়েটের ইনজিনিয়ারদের সাহায্য নিয়ে এই খসড়া তৈরি করছে টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)।

আইনে বেশ কিছু বিষয় সুপারিশ করেছেন মন্ত্রীসভার সদস্যরা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি-

(১) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয় রাতের বেলা মূর্তি ভাঙা নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ রাতের বেলা যারা মূর্তি ভাঙে, অন্ধকারে তাদেরকে দেখা যায় না। দিনের বেলা মূর্তি ভাঙতে উৎসাহিত করার জন্য প্রচার প্রচারণা চালানোর প্রস্তাব দেয়া হয়।

(২) অনেকে মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় মূর্তি চুরিতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। যারা মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায়, তারা যে মূর্তিটা ভাঙে, তার গ্যারান্টি কী? তাই মূর্তি চুরি না করে ভেঙে রেখে যাওয়ার বিষয়ে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করার অনুরোধ করা হয় এই মন্ত্রণালয় থেকে। কারণ মূর্তি ভাঙার প্রমাণ না পেলে অপরাধীকে কিভাবে গ্রেফতার করবে?

(৩) স্থানীয় সরকার মন্ত্রী দলমত নির্বিশেষে সবাই মূর্তি ভাঙার সুযোগ দেয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়। বিএনপি-জামাতের মূর্তি ভাঙার বৈধতা নাই। এখন মূর্তি ভাঙতে পারবে কেবল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এটা নিশ্চিত করা গেলে মূর্তি ভাঙা অনেক কমে আসবে।

(৪) কোনভাবেই ভাঙা মূর্তির সামনে সেলফি তোলা যাবে না। এটা অমানবিক এবং শরীয়াহসম্মত নয়। সুতরাং যে কোনভাবেই হোক ভাঙা মূর্তির সামনে সেলফি তোলা ঠেকাতে চান ধর্মমন্ত্রী।

(৫) দেশের অনেক স্থানে মূর্তি ভাঙা হয়নি বলে পুলিশ কোন একশন নিতে পারেনি। তাই অতিসত্বর ওলামালীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে ওইসব স্থানে মূর্তি ভাঙার সুপারিশ করে চিঠি পাঠিয়েছেন পুলিশের আইজি।

(৬) মূর্তি ভাঙার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং নির্দিষ্ট ফি দিয়ে অনুমতিপত্র নিতে হবে। কেউ যদি একটি মূর্তি ভাঙার অনুমতি নিয়ে দুইটি মূর্তি ভাঙে, তাহলে তাকে দ্বিগুন জরিমানা দিতে হবে। এবং ফি ও জরিমানার উপর ৭.৫% হারে ভ্যাট দিতে হবে। ভ্যাট দেয়ার ভয়ে অনেকে মূর্তি ভাঙতে ইচ্ছে হারিয়ে ফেলবে। – এটা ছিলো অর্থমন্ত্রণালয়ের সুপারিশ।

মূর্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছেন আইনমন্ত্রী

মূর্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছেন আইনমন্ত্রী

শুধু মূর্তি নয়, দেশের গণমান্য ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি রক্ষায়ও সরকার এগিয়ে এসেছে। মূর্তি ভাঙায় কিছুটা ছাড় দিলেও ভাবমূর্তি ভাঙায় কোন ছাড় দিবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, “দেশের রাজনীতিবিদ, আলেম ওলামাসহ সর্বস্তরের মানুষের একটা ভাবমূর্তি থাকে। তো এই যে ব্লগে-ফেসবুকে রাজনীতিবিদ, আলেম ওলামা নিয়ে মানুষ এটা ওটা লিখে। তো, তখন আমাদের ভাবমূর্তি ভেঙে যায়। ভেঙে পড়ে যায়। পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তারপর গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যায়। সেই গুঁড়োর উপর সেদিন এক আন্ডাবাচ্চা হিসু করে দিয়েছে। তারপর ভাবমূর্তি ভেসে চলে যায়। এখন মনে করেন, ভাবমূর্তি ছাড়া একটা মানুষ বাঁচবে কি করে!”

আপনারা আপনাদের ভাবমূর্তি আরো শক্ত করে নির্মাণ করেন না কেন? এমন প্রশ্ন করলে অর্থমন্ত্রী এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “দেখুন মূর্তি খুব ভালো জিনিস। মূর্তি দেখতে সুন্দর। কিছু মানুষ এত কষ্ট করে মূর্তি বানায়, এটা ভাঙতে হবে কেন? তাছাড়া মূর্তি ভাঙতেওতো কষ্ট আছে। তাই আমরা স্পষ্টভাবে মূর্তি ভাঙার বিরুদ্ধে।”