মূর্তি ভাঙা প্রতিরোধে আইন হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হিন্দু ধর্মালম্বীদের দূর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে চলমান মূর্তি ভাঙা উৎসবের লাগাম টেনে ধরতে যাচ্ছে সরকার। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকার মূর্তি ভাঙা নিয়ন্ত্রণ করবে।

‘মূর্তি ও ভাবমূর্তি ভাঙা প্রতিরোধ আইন ২০১৫’ নামের নতুন এ আইনটির খসড়া তৈরির কাজ প্রায় শেষের পর্যায়ে। বুয়েটের ইনজিনিয়ারদের সাহায্য নিয়ে এই খসড়া তৈরি করছে টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস)।

আইনে বেশ কিছু বিষয় সুপারিশ করেছেন মন্ত্রীসভার সদস্যরা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি-

(১) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয় রাতের বেলা মূর্তি ভাঙা নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ রাতের বেলা যারা মূর্তি ভাঙে, অন্ধকারে তাদেরকে দেখা যায় না। দিনের বেলা মূর্তি ভাঙতে উৎসাহিত করার জন্য প্রচার প্রচারণা চালানোর প্রস্তাব দেয়া হয়।

(২) অনেকে মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় মূর্তি চুরিতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। যারা মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায়, তারা যে মূর্তিটা ভাঙে, তার গ্যারান্টি কী? তাই মূর্তি চুরি না করে ভেঙে রেখে যাওয়ার বিষয়ে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করার অনুরোধ করা হয় এই মন্ত্রণালয় থেকে। কারণ মূর্তি ভাঙার প্রমাণ না পেলে অপরাধীকে কিভাবে গ্রেফতার করবে?

(৩) স্থানীয় সরকার মন্ত্রী দলমত নির্বিশেষে সবাই মূর্তি ভাঙার সুযোগ দেয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়। বিএনপি-জামাতের মূর্তি ভাঙার বৈধতা নাই। এখন মূর্তি ভাঙতে পারবে কেবল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এটা নিশ্চিত করা গেলে মূর্তি ভাঙা অনেক কমে আসবে।

(৪) কোনভাবেই ভাঙা মূর্তির সামনে সেলফি তোলা যাবে না। এটা অমানবিক এবং শরীয়াহসম্মত নয়। সুতরাং যে কোনভাবেই হোক ভাঙা মূর্তির সামনে সেলফি তোলা ঠেকাতে চান ধর্মমন্ত্রী।

(৫) দেশের অনেক স্থানে মূর্তি ভাঙা হয়নি বলে পুলিশ কোন একশন নিতে পারেনি। তাই অতিসত্বর ওলামালীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে ওইসব স্থানে মূর্তি ভাঙার সুপারিশ করে চিঠি পাঠিয়েছেন পুলিশের আইজি।

(৬) মূর্তি ভাঙার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং নির্দিষ্ট ফি দিয়ে অনুমতিপত্র নিতে হবে। কেউ যদি একটি মূর্তি ভাঙার অনুমতি নিয়ে দুইটি মূর্তি ভাঙে, তাহলে তাকে দ্বিগুন জরিমানা দিতে হবে। এবং ফি ও জরিমানার উপর ৭.৫% হারে ভ্যাট দিতে হবে। ভ্যাট দেয়ার ভয়ে অনেকে মূর্তি ভাঙতে ইচ্ছে হারিয়ে ফেলবে। – এটা ছিলো অর্থমন্ত্রণালয়ের সুপারিশ।

মূর্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছেন আইনমন্ত্রী

মূর্তি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছেন আইনমন্ত্রী

শুধু মূর্তি নয়, দেশের গণমান্য ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি রক্ষায়ও সরকার এগিয়ে এসেছে। মূর্তি ভাঙায় কিছুটা ছাড় দিলেও ভাবমূর্তি ভাঙায় কোন ছাড় দিবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, “দেশের রাজনীতিবিদ, আলেম ওলামাসহ সর্বস্তরের মানুষের একটা ভাবমূর্তি থাকে। তো এই যে ব্লগে-ফেসবুকে রাজনীতিবিদ, আলেম ওলামা নিয়ে মানুষ এটা ওটা লিখে। তো, তখন আমাদের ভাবমূর্তি ভেঙে যায়। ভেঙে পড়ে যায়। পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তারপর গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যায়। সেই গুঁড়োর উপর সেদিন এক আন্ডাবাচ্চা হিসু করে দিয়েছে। তারপর ভাবমূর্তি ভেসে চলে যায়। এখন মনে করেন, ভাবমূর্তি ছাড়া একটা মানুষ বাঁচবে কি করে!”

আপনারা আপনাদের ভাবমূর্তি আরো শক্ত করে নির্মাণ করেন না কেন? এমন প্রশ্ন করলে অর্থমন্ত্রী এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “দেখুন মূর্তি খুব ভালো জিনিস। মূর্তি দেখতে সুন্দর। কিছু মানুষ এত কষ্ট করে মূর্তি বানায়, এটা ভাঙতে হবে কেন? তাছাড়া মূর্তি ভাঙতেওতো কষ্ট আছে। তাই আমরা স্পষ্টভাবে মূর্তি ভাঙার বিরুদ্ধে।”

One Comment to “মূর্তি ভাঙা প্রতিরোধে আইন হচ্ছে”

  1. হায়রে সালার আইন…পাইলে তোদের সব গুলোকে ওই হিসুই খাওয়াতাম…!!! কুত্তার বাচ্চারা মূর্তি যত ভানবি…তোদের ধংস ও তত তাড়াতাড়ি হবে…!!!

    Like

Leave a comment